বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়, সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সভাপতি সনজিৎ চন্দ্র দাশ ও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসাইনসহ আট নেতার সঙ্গে গল্পে মেতে উঠেছিলেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এসময় ছাত্র নেতাদের বিভিন্ন বিষয়ে দিক-নির্দেশনাও দেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শেখ হাসিনা।
সোমবার (৪ অক্টোবর) বিদেশ সফর উপলক্ষ্যে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন শেষে গণভবনে দেড় ঘণ্টার অনানুষ্ঠানিক ওই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। একাধিক সূত্রে জানা গেছে আড্ডায় শেখ হাসিনা বলেছেন, দলাদলির ঊর্ধ্বে থেকে সংগঠনের নেতৃত্ব দিতে হবে তোমাদের। বিশেষ কোনও নেতাকে প্রাধান্য দিয়ে নয়, কাজ করবে সবাইকে নিয়ে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল কমিটি গঠন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সনজিৎ চন্দ্র দাশ আলোচনা তুললে শেখ হাসিনা বলেন, হল কমিটি করে ফেল। তবে সব কাজই ধীরে করা ভালে। তিনি বলেন, ‘সময় নিয়ে কোনও কাজ করলে সেটা নিঃসন্দেহে ভালো হয়।’
এসময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল কমিটির অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে শেখ হাসিনার উপস্থিতি নিশ্চিত করার অনুরোধ করেন সনজিৎ। তিনি বলেন, ‘আপা, আপনাকে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকতে হবে।’ প্রতিউত্তরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘প্রধান অতিথি হিসেবে না, দাদি হিসেবে চাও’। এসময় মজা করে শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘আমাকে আপা নয়, দাদি ডাকবা তোমরা।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের ব্যানারে নানা কর্মসূচির আয়োজনের পেছনে শিবির সংঘবদ্ধ রয়েছে; ছাত্রলীগ নেতারা এমন তথ্য জানালে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শিবির সবসময়ই ছিল। তারা প্রকাশ্যে কর্মকাণ্ড চালালে ক্ষতি কী? বরং গোপন কর্মকাণ্ড ক্ষতির ও আশঙ্কার।’
তিনি ছাত্রলীগ নেতাদের বলেন, ‘তোমরা সাধারণের সঙ্গে মিশে সংগঠনের কাজ করো। নীতি আদর্শ নিয়ে কাজ করো।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার দিন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা শিক্ষার্থীদের পানি, মাস্ক, স্যানিটাইজার ও কলম সহায়তা দিচ্ছে অন্যদিকে ছাত্রদল শোডাউন করছে, কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করে না- ছাত্রলীগ নেতারা এমন অভিযোগ জানালে শেখ হাসিনা বলেন, তোমরা তোমাদের কাজ কর। কে কী করলে তাতে মনযোগ দেওয়ার প্রয়োজন নাই। তাছাড়া তাদের নেতা আর তোমাদের নেতা শেখ হাসিনা কি এক হলো?
এসময় শেখ হাসিনা ছাত্রলীগ নেতাদের কার কোন জেলায় বাড়ি এই পরিচয় নেন। পরিচয় দেওয়া শেষ হলে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শেখ হাসিনা বলেন, বাহ্, সারাদেশ আছে এখানে। এসময় সেখানে উপস্থিত থাকা দলের প্রচার সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ বলেন, ‘আপা ঢাকা ও চট্টগ্রাম নাই।’
ছাত্রলীগ নেতারা তাদের বয়সসীমা বাড়ানোর জন্য অনুরোধ করলে শেখ হাসিনা বলেন, ‘না। ২৪-২৫ বছরের পরে কারও লেখাপড়া হয় না।
উপস্থিত আট নেতার মধ্যে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকও উপস্থিত ছিলেন এই গল্পের আসরে।